শরফুদ্দিন আহমেদ বাবু ॥ দেশের দক্ষিণঞ্চলে ভোরে প্রচুর কুয়াশা ঝরলেও এখনও শীতের আগমনী বার্তা নেই প্রকৃতিতে। অন্যান্য বছর এই সময় শীতের বিস্তার শুরু হলেও এবার অনুভূত হচ্ছে তীব্র গরম। প্রচুর বৃষ্টি ও বন্যা হওয়ায় এ বছর শীত জেঁকে বসার শঙ্কা কম বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। গত দু একদিনে ধরে ভোরবেলা দেখা যায়-হালকা কুয়াশায় ঢেকে রয়েছে রাস্তা-ঘাট গাছপালা। সড়কে মহাসড়কে হোন্ডা,বাস,পিকাপগুলো চলাচল করছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। আর ঘাসের ওপর ভোরের সূর্য আলোতে হালকা লালচে রঙের ঝিলিক দিচ্ছে কুয়াশার ফোটা গুলো। স্থানীয়রা বলেছেন,গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে এ বছর আগাম শীত অনুভব হচ্ছে না। দিনের বেলায় কিছুটা গরম থাকলেও সন্ধা নামার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে শুরু করে। গভীর রাত হলেই বৃষ্টির মত টিনের চাল থেকে টিপটিপ করে ঝরতে থাকে কুয়াশার ফোটা গুলো। বিশেষ করে মাঠে ঘাসের ডগায় ও ধানের বিচে জমতে দেখা বিন্দু বিন্দু কুয়াশা।
হালকা কুয়াশায় ঠিকই ঢাকা পড়ছে সূর্য ওঠা ভোর। শেষ হেমন্তের বাড়ন্ত ধানের ছড়ায়, ঘাসের ডগায়, বাঁশের পাতায় কিংবা বুনো ফুলের পাপড়ি ছুঁয়ে মুক্ত দানার মতো ঝুলছে জমাট বাঁধা শিশির বিন্দু। বেশ খানিকটা বেলা গড়িয়ে সূর্যের আলো এসে পড়লে সেই বিন্দু বিন্দু জল ঝিকিমিকি আলো ছড়িয়ে সৃষ্টি করছে এক ভিন্ন ব্যঞ্জনা। এমন দিনে আবিরের মতো করে হিম হিম অনুভূতি গায়ে মাখতে ভেজা ভেজা ধানক্ষেতে আলের ওপর নগ্ন পায়ে শিশুরা
কিন্তু এবার শীত মোটেও অনুভূত হচ্ছে না অন্যান্য বারের মতো। স্থানীয়রা বলেন, কুয়াশা পড়লেও শীত অনুভূত হচ্ছে না। গত বছরের একই সময়ে শীত পড়লেও এ বছর প্রচ- গরম। অতিবর্ষণ ও বন্যার কারণে এখনও জলাশয় পানিতে ভরা। তাই বেশি জলীয়বাষ্পে কুয়াশা দেখা যাচ্ছে । একই কারণে এবারের শীতের তীব্রতা কম হবে বলে মনে করছেন গ্রামবাংলা অতি বৃদ্ধা বয়সের মানুষ।
কলাপাড়া আবহাওয়া অফিস থেকে জানিয়েছেন। খালে-বিলে পানি থাকায় জলীয় বাষ্প হচ্ছে। এ কারণে ভোরের দিকে কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। এ বছর বৃষ্টি হওয়ায় শীত কিছুটা কম হতে পারে। হেমন্ত মানেই শীতের আগমনী। শিশিরভেজা ঘাস, ভোরে ও সন্ধ্যায় কুয়াশার চাদরে ঢাকা প্রকৃতি। শীতের আগাম সবজিতে ক্ষেতে কৃষকের ব্যস্ততা। শহরের কিছু সাধারণ মানুষেরা বলছেন, ‘হেমন্ত মানে শীত শীত ভাব, ঠান্ডা বাতাস, ঠান্ডা প্রকৃতি। শেষ রাতের দিকে ঠান্ডা লাগে, পরে হয়তো হালকা চাদর মুড়ে দেই। গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষেরা বলছেন, অপ্রাপ্তি আর দুঃখবেদনা যতই থাকুক, হেমন্ত এলে প্রকৃতির মতো তাদের জীবনেও যেন এক শীতলতা, যেন এক অন্যরকম অনুভূতি তৈরি হয়।
Leave a Reply